গ্যালারি

দরবারী আলেমদের বর্জন করুন


আমাদের সমাজে একদল মুনাফেক আলেম আছে, যারা নিজেরা সব কিছু যানার পরো সত্য কথা বলতে ভয় পায়, এবং অন্যদেরও কোরান হাদীসের ভূল ব্যখ্যা দিয়ে গোমরাহ করে রাখে। আবার অনেকে খুব সামান্য টাকার বিনিময়ে নিজেদের ঈমান কে বিক্রি করে দেয়। মসজিদে সব রকম আলোচনা করলেও যেই বিষয় গুলো স্পষ্ট ভাবে কোরান ও হাদীসে বলা আছে সেই গুরুত্ব পূর্ন বিষয় গুলো গোপন রাখে ও অনেক সময় নিজের স্বার্থে ভূল ব্যাখা করে। আবার যে বিষয় গুলো আমাদের অবশ্য কর্তব্য সেগুলো নিজেরা পালন তো করেইনা,অন্যদেরও সেই সম্পর্কে বলেনা ও উৎসাহিত করেনা।একটা উদাহরন দেইঃ
“যারা আমার আবতীর্ণকরা বিধান দ্বারা সমাজে বিধান দেয়না বা শাসনকাজ পরিচালনা করেনা, তারাই কাফির,.তারাই জালিম, তারাই ফাসিক।“(সূরা মায়েদাহঃ ৪৪-৪৬)
উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ স্পষ্ট ভাবে বলেদিয়েছেন কারা কাফের। এরকম অনেক আয়াত আছে যেগুলো স্পষ্ট। আর এই কাফেরদের বিরুদ্ধে কি করতে হবে সেটাও স্পষ্ট ভাবেই কোরান ব্যাখা করা আছে। কিন্তু একদল ভন্ড আলেম টুপি পরে, দাড়ি রেখে লম্বা জুব্বা পরে, মানুষ কে গোমরাহ করেই চলেছে। তারা কাফেরদের ভয়ে, কাফেররদের কাফের বলতে নারাজ, তারা ফতোয়া দেয়, কোন ব্যক্তি নাকি অন্য কাউকে কাফের বলতে পারবেনা। এই সব ভন্ড ফতোয়া বাজদের সম্বন্ধে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কোরানে বলেছেন।
“তিনিই আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন। তাতে কিছু আয়াত রয়েছে সুস্পষ্ট, সেগুলোই কিতাবের আসল অংশ। আর অন্যগুলো রূপক। সুতরাং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে, তারা অনুসরণ করে ফিৎনা বিস্তার এবং অপব্যাখ্যার উদ্দেশে তন্মধ্যেকার রূপকগুলোর। আর সেগুলোর ব্যাখ্যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না।“ (সূরা-আল ইমরানঃ ৭)
এরাই হলো সে লোক যাদের সমগ্র আমল দুনিয়া ও আখেরাত উভয়লোকেই বিনষ্ট হয়ে গেছে।পক্ষান্তরে তাদের কোন সাহায্যকারীও নেই। (সূরা-আল ইমরান)
আর এই ভন্ড মুনাফেক, কাফেরদের ভয়ে ভীত দালালরা, মসজিদের চাকুরী হারানোর ভয়ে, সামান্য টাকার লোভে কিতাবের আসল অংশ বাদ দিয়ে, রুপক বিষয় গুলোনিয়ে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
কোরানে বর্নিত মূল বিষয় গুলোর মধ্যে জিহাদ অনতম।

প্রথমে একটা হাদীসঃ হাসান ইবন সাববাহ (রহঃ) আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাঃ) -কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ইয়া রাসূল (সাঃ)! কোন কাজ সর্বোত্তম? তিনি বললেন, ‘সময় মত সালাত (নামায) আদায় করা। আমি বললাম, ‘তারপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘আল্লাহর পথে জিহাদ।(সহীহ বুখারি-২৫৯১অধ্যায়ঃ৪৮)

দরবারী আলামেদের ব্যাপারে রাসূল (সঃ) এর ভবিষ্যত বানী

হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত, মহানবী সা. বলেন, আমি অচিরেই লোকদের উপর এমন একটি সময় আসার আশংকা করছি, যখন কেবলমাত্র নাম ছাড়া ইসলামের আর কিছুই বাকি থাকবে না এবং কুরআনের লিখিত রূপটি ছাড়া তার বাস্তবায়ন থাকবে না। মসজিদগুলো চাকচিক্যে ভরপুর হলেও হিদায়াত থেকে বঞ্চিত হবে। ঐ সময়কার আলেমরা হবে আসমানের নিচে বিচরণকারী সর্বনিকৃষ্ট জীব। তাদের থেকেই বিভিন্ন ফিৎনা ছড়াবে এবং তারা নিজেরাও সেই ফিৎনায় আবর্তিত হবে।” (বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, সহীহ)

হযরত কা’ব ইবনে উজরত রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন একদিন প্রিয়নবী সা. আমাদের মাঝে আসলেন তখন আমরা নয়জন এক স্থানে ছিলাম। তিনি আমাদের কাছে এসে বললেন, জেনে রাখো আমার পর অচিরেই অনেক জালিম শাসক আসবে। যারা সেই সকল শাসকদের সাথে আঁতাত করবে, তাদের অন্যায় গুলোকে সমর্থন দিবে এবং তাদের জুলুমে সহযোগিতা করবে, সে আমার উম্মত নয় এবং আমিও তার দায়িত্ব নিবো না এবং (কিয়ামতের দিন) তাকে আমার হাউজে কাউসারের সামনে আসতে দেয়া হবে না।
আর যারা সেই সকল জালিম শাসকদের সাথে আঁতাত করবে না, তাদের জুলুমে সহায়তা করবে না বরং তাদের অন্যায়সমূহের বিরোধিতা করবে তারা আমার উম্মত এবং আমি তাদের দায়িত্ব নিবো এবং তাদেরকে (কিয়ামতের দিন) হাউজে কাউসারের পানি পান করানো হবে।” (সহীহ তিরমীজি ও নাসায়ী, হাদীস নং ৪২০৭)

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ অচিরেই আমার উম্মতের মাঝে কিছু সংখ্যক লোক দীনের গভীর জ্ঞান অর্জন করবে এবং কুরআন মাজীদ পড়বে। তারা বলবে, ‘আমরা রাস্ট্রনায়ক ও ক্ষমতাসীনদের কাছে যাই তাদের পার্থিব স্বার্থে কিছুটা ভাগ বসানোর জন্য এবং আমরা নিজেদের দীঙ্কে অক্ষুন্য রেখেই তাদের নিকট হতে সরে পড়ব।’ কিন্তু তা সম্ভব নয়। যেমন কাঁটাযুক্ত কাতাদ গাছ থেকে কাঁটা ব্যতীত কোন ফল লাভ করা যায় না, তেমনি এদের নিকট থেকেও কোন ফল লাভ করা যায় না, কিন্তু……।” [ইবনে মাজাহ]
রাবী মুহাম্মাদ ইউনুস সাব্বাহ (রঃ) বলেন, ‘রাষ্ট্রনায়ক ও ক্ষমতাসীনদের নৈকট্য দ্বারা গুনাহ ব্যতীত আর কিছুই লাভ করা যায় না।’ কিন্তু শব্দ দ্বারা রাসুল (সাঃ) সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন।

রাসুল (সাঃ) আরও বলেছেন, “আল্লাহ্* তা’আলার নিকট সবচেয়ে নিকৃষ্ট আলেম হল তারা, যারা সমসাময়িক শাসক গোষ্ঠীর দরবারে যাতায়াত করে।” [ইবনে মাজাহ]
রাবী মুহারিবী (রঃ) বলেন, ‘এখানে শাসক গোষ্ঠী বলতে সমসাময়িক স্বৈরাচারী শাসক গোষ্ঠীকে বোঝানো হয়েছে।

———————————————————————————————————–
**তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না। (সূরা বাকারাঃ২১৬)
**যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিপক্ষে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে,তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে।এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি। (সূরা মায়েদাহ-৩৩)
**হে ঈমানদারগণ! নিজেদের অস্ত্র তুলে নাও এবং পৃথক পৃথক সৈন্যদলে কিংবা সমবেতভাবে বেরিয়ে পড়। (সুরা নিসা-৭১)
**হে মুমিনগন, ঐ কাফেরদের সাথে যুদ্ধকর যারা তোমাদের নিকটবর্তী, যেন তারা তোমাদের মাঝে কঠোরতা খুঁজে পায়, আর জেনে রাখ আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন। (সূরা তাওবাঃ ১২৩)
**হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি হল, যখন আল্লাহর পথে বের হবার জন্যে তোমাদের বলা হয়, তখন মাটি জড়িয়ে ধর,তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে?অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অতি অল্প।(সূরা তাওবাঃ৩৮)
**”তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর রসূলকে অমান্য করে, তার জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুন, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।” (সূরা জ্বিন ২৩)
**”রাসূল তোমাদের যা কিছু দেয় তা তোমরা গ্রহণ করো এবং সে যা কিছু নিষেধ করে তা থেকে বিরত থাকো, আল্লাহ তায়ালাকেই ভয় করো; অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা কঠোর শাস্তিদাতা।” (হাশর ৭)

———————————————————————-

একসময় এমন সময় আসবে, যখন পৃথিবীতে নামমাত্র ইসলামী রাষ্ট্র থাকবে! কিন্তু তার শাসন চলবে ব্যক্তির খেয়াল- খুশী মত! আল্লাহর কালাম নয়–রাষ্ট্র চলবে শাসকের ইচ্ছামাফিক! আর এই শাসকরা থাকবে আমোদ- ফুর্তিতে বিভোর-মগ্ন! শাসন ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বন্ধু বানাবে শক্তিধর জাতশত্রুকে! গদি ঠিক রাখতে নিজেদের ঈমানকেও তারা নিলামে তুলে দেবে! তখন চামচিকা লাথি মারবে হাতির গায়ে! ইঁদুরের ভয়ে সিংহ গর্তে লুকাবে! প্রজাদের কাছে মুসলিম সরকার ও শাসকরা মূল্যহীন হয়ে পড়বে! রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্রনায়করা ঘৃণ্য বলে বিবেচিত হবে”
– সুলতান সালাউদ্দীন আইয়ুবী।

=======================================================================
[*****বিঃদ্রঃ আমি কোন আলেম না, বা কোরানের হাফেজ না, কিন্তু যেটুকুই যানি না কেন, সঠিক টাই জানার চেস্টা করি, এবং সঠিক যেটা সেটাই পালন করব, কোন দরবারী আলেমের ভুল ফতোয়া অনুযায়ী নয়। আর আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ, কেউ কোন ফতোয়া দিলে, সেটা কোরান ও হাদীসের দলিল দেখে যাচাই করে নিবেন, যাজাকাল্লাহ খাইর*****]

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান