গ্যালারি

হরতাল একটি কুফরী মতবাদ (কোরাআন হাদীসের রেফারেন্স সহ)


এই নামধারী ইসলামী দলের আন্দোলনের উদ্দেশ্য ন্যায্য হলেও যে পদ্ধতিতে তারা এই আন্দোলন করছেন, সেটাকে আমরা সঠিক মনে করি না। বরং সেটা অনেক ক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে ইসলামী শরীয়াতের লংঘন, হারাম ও কবিরা গুনাহ।যেমনঃ

যারা বিভিন্ন সময় হরতাল করছেনঃ
আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত; রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘তোমরা রাস্তার উপর বসা থেকে বিরত থাক”।সাহাবাগন বলেন, “হে আল্লাহর রাসুল! রাস্তায় বসা ছাড়া তো আমাদের কোন উপায় নেই। আমরা সেখানে বসে পারস্পরিক প্রয়োজন সম্পর্কিত আলাপ-আলোচনা করে থাকি”। রাসুলুল্লাহ(সাঃ) বলেনঃ “তোমরা যখন রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাকতে অস্বীকার করছ, তাহলে রাস্তার অধিকার আদায় কর”। তারা বলেন, “হে আল্লাহর রাসূল! রাস্তার অধিকার আবার কি?” তিনি বলেনঃ “রাস্তার অধিকার হল, দৃষ্টি সংযত রাখা, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করা, সালামের জবাব দেয়া, সৎ কাজের নির্দেশ দেয়া এবং অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখা”। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

ঈমানের সত্তরটি শাখার মধ্যে সবনিম্ন শাখা হল রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরানো,আর যারা হরতাল করে তারা রাস্তায় কষ্ট দায়ক বস্তু দেয়, সাধারন মানুষের ক্ষতি করে, নিজেদের দাবী আদায় করতে চায়।
যদি রাস্তা থেকে কষ্টকর বস্তু সরানো রাস্তার হক্ব হয়ে থাকে, তাহলে জনগণের জন্য রাস্তা বন্ধ করে দেয়া, রাস্তা অবরোধ করে রাখা কিভাবে ইসলামে অনুমোদিত হতে পারে?

হরতালের দিনে গরীব রিকশাওয়ালা, দিন-মজুররা কিভাবে তাদের রুজী জোগাড় করবেন? সেদিন অনেক দিন মজুর হয়তো অর্ধাহারে – অনাহারে দিন কাটান। তারা তাদের পেটের ভাত কিভাবে জোগাড় করবেন? এই দায়িত্ব যারা হরতাল পালন করেন তাদেরকে নিতে হবে। এটা মস্ত বড় জুলুম। নিজেদের দাবী আদায়ের জন্য ইসলামী শরীয়াত সম্মত পন্থা বাদ দিয়ে সাধারণ দুর্বল মুসলমানদেরকে চাপে ফেলা কোন ক্রমেই জায়েজ নয়।

“আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে ফায়সালা করলে কোন মু’মিন পুরুষ কিংবা মু’মিন নারীর নিজেদের কোন ব্যাপারে অন্য কোন সিদ্ধান্তের ইখতিয়ার থাকবে না। কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করলে সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।” (সূরা আহযাবঃ৩৬)

হরতাল-অবরোধ ইত্যাদি এর মুল লক্ষ্যই হলো সাধারণ জন-জীবন ব্যাহত করে সরকারকে নিজের দাবী মানতে বাধ্য করা। এটা কিভাবে ইসলামে অনুমোদিত হতে পারে। অথচ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেনঃ
وَلاَ تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى
“কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না”

এটাই শরীয়াতের একটা উসুল যে, একজনের অপরাধের জন্য অন্যজনকে শাস্তি প্রদান করা যাবে না। তাহলে মুরতাদ সরকার ও সেই দলের মুরতাদ নেতা কর্মী কিংবা রামপন্থী-বামপন্থীদের জুলুম ও অপরাধের কারণে কিভাবে সাধারণ মুসলমানদেরকে কষ্টে ফেলা অনুমোদিত হয়?
আর এই পদক্ষেপের ফলে মুল অপরাধীরা সবসময় অন্ধকারে আড়ালে চলে যায়। এটা ন্যায় বিচার ও ইনসাফের খেলাফ।

আপনারা যদি মনে করেন হরতাল, আর মানুষের গাড়ি ভাংচুর করে আপনি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করছেন, তাহলে মনে রাখবেন আপনি জিহাদ করছেন না বরং জিহাদের অবমাননা করছেন।যদি সত্যিই জিহাদ করতে চান তবে পবিত্র কোরান ও হাদীস এ বর্নীত পদ্ধতি অনুযায়ী জিহাদ করুন। হরতাল, অবরধ এইগুলা কোরান ও হাদিস এ বর্নিত পদ্ধতি না। পিকেটিং সরিয়াত সম্মত না। ইসলামি নেতারা অবস্যই বৈঠক করতে পারেন। নবীজী (সঃ) নিজে অনেক চুক্তি করেছেন, আর না হয় যুদ্ধ ঘোষনা করেছেন, হরতাল, বা পিকেটিং এর মত কোন কাজ করে সাধারন মানুষ কে কষ্ট দেননি। তাহলে কি আপনি বুঝাতে চাচ্ছেন রাসুল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গনতন্ত্র করেছেন?(নাউযুবিল্লাহ্‌)

ইসলাম কি গনতন্ত্র,ভোট-নির্বাচন,হরতাল,লং-মার্চ,কুশপুত্তলিকা দাহ এগুলোকে সমর্থন করে? নাকি এগুলো বিধর্মীদের দ্বারা প্রবর্তিত হারাম নিয়ম-নীতি? কোন হারাম পন্থায় আর যা’ই হোক ইসলাম কায়েম হয়না।কোন কোন সময়,ক্ষেত্র বিশেষে বিধর্মীদের সাথে যে চুক্তিগুলো হয়েছিল তা ছিল ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য শান্তিপূর্ন কোশল,যাতে কোন হারাম পন্থা অবলম্বন করা হয়নি,আর তা হয়েছিল মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুতাবেক।ঈমানের সত্তরটি শাখার মধ্যে সবনিম্ন শাখা হল রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরানো,আর যারা হরতাল করে রাস্তায় কষ্টদায় বস্ত দেন, সাধারন মানুষ কে কষ্ট দেয়, আল্লাহ ও রাসূলের দেওয়া পন্থা অবলম্বন করে না তারা কিভাবে নিজেদের ইসলামি দল দাবী করে?

হারাম পন্থায় ইসলাম প্রতিষ্ঠার চিন্তা ও আদর্শটুকো শরীয়ত বিরোধী ও কুফরী। যা কোন হক্বপন্থী মুসলমান অনুসরন করতে পারেনা।

আসুন গনতন্ত্রের মত শয়তানের পথে সংগ্রাম না করে আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) ও তাঁর সাহাবীদের দেখানো পদ্ধতিতে সংগ্রাম করে, জিহাদ করে সকল প্রকার তাগুত,নাস্তিক,মুর্তাদ ও জালিম কাফের শাসকদের উৎখাত করে আল্লাহ্‌র জমিনে আল্লাহ্‌র দ্বীন তথা খিলাফতকে প্রতিষ্ঠিত করি । ইনশাআল্লাহ বিজয় আমদের হবেই হবে। কারন পবিত্র কোরানে আল্লাহ বলেছেন
“তোমাদের কোন ভয়নেই, তোমাদের কোন চিন্তানেই, তোমরাই হবে বিজয়ী, তোমরাই থাকবে উচ্চাসনে, যদি তোমরা মুমিন হও।“ (আল ইমরান: ১৩৯)
“আমার রাসূল ও বান্দাগণের ব্যাপারে আমার এই বাক্য সত্য হয়েছে যে, অবশ্যই তারা সাহায্য প্রাপ্ত হয়। আর আমার বাহিনীই হয় বিজয়ী” (আস সাফফাত: ১৭১,১৭২,১৭৩)

আমরা একমাত্র তখনই আল্লাহর পক্ষ হতে সাহায্য পাব যখন আমরা আল্লাহ ও রাসূল(সঃ) এর দেওয়া বিধান অনুযায়ী আন্দোলন করবো। আর যতদিন কুফরী পন্থা অবলম্বন করবো ততদিন আমরা কেবল নির্যাতিত,লাঞ্ছিতই হতে থাকবো, আল্লাহর সাহায্য পাবোনা।

আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিক দ্বীনের পথে পরিচালিত করুন, হ্বক ও ন্যায়ের পথে অবিচল রাখুন, আমাদের ধৈর্য ধারনের তৌফিক দান করুন, আল্লাহ আমাদের কে কাফের,মুনাফিক,মূর্তাদদের উপরে বিজয় দান করুন। আমীন।

( বিঃদ্রঃ যাদের মনে সন্দেহ আছে যে ইসলামে গনতন্ত্র হারাম না, তারা এই লিঙ্ক থেকে বিস্তারিত জেনে নিন। )

2 comments on “হরতাল একটি কুফরী মতবাদ (কোরাআন হাদীসের রেফারেন্স সহ)

  1. পিংব্যাকঃ Faisal Mahmud (ফয়সাল মাহমুদ)

  2. পিংব্যাকঃ জামাত ইসলামের আমীরের কাছে কিছু প্রশ্ন | Faisal Mahmud (ফয়সাল মাহমুদ)

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান